টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গড়ার পথে থাকলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। মঙ্গলবার ফলাফল ঘোষণার শুরু থেকেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ’র ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া।

বুথফেরত জরিপের প্রতিবেদন ভুল প্রমাণ করে ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে রয়েছে ২৩৩টি আসনে। তবে সর্বাধিক ২৯২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে এনডিএ’ই। ফলে সরকার গঠন করতে হলে জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা করা ছাড়া উপায় নেই বিজেপির।

মঙ্গলবার ফলাফল ঘোষণা শুরু হওয়ার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। কংগ্রেস নেতা বলেছেন, ‘মোদি-অমিত শাহকে চায় না ভারতের জনগণ।

তিনি বলেন, এ নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকেও কারাগারে পুরেছে।

জনগণ ব্যবসায়ী গৌতম আদানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ককে এক করে দেখেছে মন্তব্য করে রাহুল গান্ধী বলেন, এটা দুর্নীতির সরাসরি সম্পর্ক। ভোটাররা মোদিকে বলে দিয়েছেন, তারা আর তাকে চান না।

সংবাদ সম্মেলনের সময় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৯০ আসনে এগিয়ে ছিল। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ছিল ২৩৪টি আসনে। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সরকার গঠনে প্রয়োজন ২৭২ আসন। একক দল হিসেবে বিজেপি এগিয়ে ছিল ২৪০ আসনে আর কংগ্রেস এগিয়ে ছিল ১০০টি আসনে। বর্তমানে এনডিএ জোটে থাকা তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি আর জনতা দল (ইউনাইটেড/জেডি-ইউ) ১২টি আসনে এগিয়ে ছিল।

সরকার গঠনের চেষ্টায় সাবেক জেডি–ইউ ও টিডিপির সঙ্গে কংগ্রেস আলোচনা করবে কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে রাহুল গান্ধী বলেন, ইন্ডিয়া জোটের সদস্যদের নিয়ে আগামীকাল (বুধবার) আমরা বৈঠক করব। আগামীকাল আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

এ সময় রাহুল বলেন, আমরা ইন্ডিয়া জোটের সব সদস্যের প্রতি সম্মান জানাই। আমরা একসঙ্গে এ নির্বাচনে লড়েছি। জাতির সামনে নতুন রূপকল্প তুলে ধরেছে কংগ্রসে।

ভোটের ফলাফলকে মোদির বিরুদ্ধে গণরায় দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেআইনিভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। এসব প্রতিষ্ঠানকে তারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল।

লোকসভা নির্বাচনে জনগণ ও গণতন্ত্রের জয় হয়েছে উল্লেখ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, জনগণ কোনো একটি দলকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়নি। বিজেপি এক ব্যক্তির জন্য ভোট চেয়েছিল। মোদিজির বিরুদ্ধে গণরায় এসেছে।